৩০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
shadhin kanto

সবুজ চিন্তায় সবুজ পৃথিবী,কপিলমুনির সিদ্দীক গাজীর সবুজ চিন্তা।

প্রতিনিধি :
স্বাধীন কণ্ঠ
আপডেট :
অক্টোবর ৩১, ২০২০
21
বার খবরটি পড়া হয়েছে
শেয়ার :
| ছবি : 

শেখ খায়রুল ইসলাম কপিলমুনি (খুলনা)প্রতিনিধি: গাছ লাগিয়ে কেউ দেউলিয়া হয়না। তাই সে নিজের জায়গায় হোক, বা পরের জায়গায়। গাছের সুবিধা তো মানুষই ভোগ করবে। গাছ মানুষের বেঁচে থাকার প্রধান উপাদান অক্সিজেন দেয়, আর শুষে নেয় মানুষের নির্গমিত কার্বনডাই অক্সাইড। মানুষ, দেশ ও পৃথিবীকে নিয়ে যার এমন চিন্তা তিনি তো সম্মান পেতেই পারেন।

সিদ্দিক গাজী ভাল নেই, মানুষের প্রয়োজনে দিনের সিংহভাগ সময় ব্যয় করে নিজ উপার্জনের সময় তিনি কমই পান। স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে পলিথিনের ঘরে বসবাস করেও যিনি এমন দিবা স্বপ্ন দেখতে পারেন তিনি কপিলমুনির গর্ব সিদ্দিক গাজী।

প্রায় ৩ যুগ ধরে তিনি খুলনা, সাতক্ষীরা ও যশোর অঞ্চলের বিভিন্ন শিক্ষা, সামাজিক প্রতিষ্ঠান ও রাস্তার পাশে রোপন করেছেন ১২ হাজারেরও বেশী বকুল ফুল গাছ। ইতোমধ্যে বিটিভির জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ইত্যাদি’ তাকে নিয়ে ভিন্ন মাত্রার অনুষ্ঠান প্রচারের পাশাপাশি আর্থিক সহযোগিতা করেছে। এবার কপিলমুনির শেখ ইমাম উদ্দীন সংসদ তাকে সম্মাননার সাথে দিয়েছে আর্থিক সহযোগিতা। তবে এবারের সম্মাননায় নাকি তার দায়িত্ব বেড়েছে বহুগুনে। সহজ ভাষায় সাদা মনের মানুষ সিদ্দিক গাজী তার প্রতিক্রিয়ায় এমনটাই বলছিলেন।

গত৩০শে অক্টোবর শুক্রবার বিকালে শেখ ইমাম উদ্দীন সংসদের আহবায়ক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড.স,ম আলী রেজার সভাপতিত্বে কপিলমুনি মেহেরুন্নেছা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের বীর মুক্তিযোদ্ধা মোড়ল আব্দুস সালাম মিলনায়তনে বৃক্ষ প্রেমী দূষণমুক্ত আগামীর দেশ গড়ার প্রত্যয়ে সবুজায়নের জন্য ছুটেচলা অক্ষর জ্ঞানহীন সাদা মনের মানুষ মোঃ সিদ্দীক গাজীকে (বকুল ট্রি) আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানে ঐ সম্মাননা প্রদান ও অর্থিক সহযোগিতা করেছে।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, শেখ ইমাম উদ্দীন পরিষদের সদস্য শেখ হাফিজুর রহমান, বিশেষ জজ, (জেলা ও দায়রা জজ) ঢাকা বিশেষ জজ আদালত-0৯, কাঁঠালিয়া, ঝালকাঠি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুফল চন্দ্র গোলদার, কপিলমুনি কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ হাবিবুল্যাহ বাহার, সাবেক উপাধ্যক্ষ মোঃ আফসার আলী, সিনিয়র সাংবাদিক এস,এম মুস্তাফিজুর রহমান পারভেজ, কপিলমুনি সহচরী বিদ্যা মন্দিরের সাবেক প্রধান শিক্ষক অমিও রঞ্জণ দে, পাইকগাছা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি ও উপজেলা আ’লীগের সহ-সম্পাদক আনন্দ মোহন বিশ্বাস, কপিলমুনি ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ কাওছার আলী জোয়ার্দার, কপিলমুনি ইউনিয়ন আ'লীগের সভাপতি যুগোল কিশোর দে, সাধারণ সম্পাদক শেখ ইকবাল হোসেন খোকন, অধ্যক্ষ মুজিবর রহমান, প্রভাষক রেজাউল করিম খোকন, কপিলমুনি বণিক সমিতির সভাপতি এম,বুলবুল আহমেদ, বিশিষ্ঠ ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব ও ব্যাংকার শেখ আব্দুর রশিদ, সিনিয়র সাংবাদিক ও কলাম লেখক শেখ আব্দুস সবুর, কপিলমুনি মেহেরুনেচ্ছা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রহিমা আখতার শম্পা, কপিলমুনি প্রেসক্লাবের সভাপতি শেখ শামছুল আলম পিন্টু, তালা প্রেসক্লাবের সভাপতি প্রভাষক প্রনব ঘোষ বাবলু, প্রভাষক রেজাউল করিম খোকন, কপিলমুনি পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সঞ্জয় দাশ, ইমাম উদ্দিন সংসদের যুগ্ম আহ্বায়ক জি এম আমিনুল ইসলাম, সকারী অধ্যাপক, (ফরেইন এক্সপার্ট) স্টেইট ব্যুরো অব ফরেইন এক্সপার্ট, গুয়াংজু, চায়না, আব্দুল্লাহ আল মামুন,মোহনা টেলিভিশনের উপজেলা প্রতিনিধি তৃপ্তি রঞ্জন সেন, দীপ্ত নিউজের মফ:স্বল বার্তা সম্পাদক ও খুলনা টাইমসের স্টাফ রিপোর্টার শেখ নাদীর শাহ্ শেখ খায়রুল ইসলাম প্রমূখ।

সমগ্র অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনায় ছিলেন, শেখ ইমাম উদ্দিন সংসদের যুগ্ম আহবায়ক শেখ আব্দুল্লাহ আল মামুন।
প্রসঙ্গত, সিদ্দিক গাজী খুলনার পাইকগাছা উপজেলার কপিলমুনি ইউনিয়নের শ্যামনগর গ্রামের বেলায়েত আলী গাজীর ছেলে। দাম্পত্য জীবনে তিনি এক ছেলে জাদিুল (১১) ও এক মেয়ে খাজিা (৮) এর জনক। ১৯৮৫ সাল থেকে তিনি পৈত্রিক বসত বাড়ির এক খন্ড জমিতে নিজ উদ্যোগে ছোট্ট বকুল ফুল গাছের নার্সারীতে গড়ে তোলেন। সেখান থেকে উৎপাদিত চারা নিয়ে প্রথমত উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও পরবর্তী পর্যায়ে সাতক্ষীরা ও যশোর জেলার বিভিন্ন শিক্ষা, সামাজিক প্রতিষ্ঠান ও রাস্তার পাশে রোপন করেন যা,অব্যাহত রয়েছে এখনো। বর্তমানে তিনি মনোনিবেশ করেছেন তাল গাছের চারা রোপনে। শুনেছেন, দূর্যোগপ্রবন বাংলাদেশে বজ্রপাত নিরোধ বা প্রতিরোধে তালগাছ বড় ভূমিকা রাখে। তাই বছর দু’য়েক আগে থেকে বিভিন্ন গাছ তলার তালের আঁটি সংগ্রহ ও তাল কিনে শুরু করেছেন তাল গাছ রোপনের কার্যক্রম।

এলাকাবাসী জানান, ১৯৯২ সালের ইউপি নির্বাচনে সিদ্দিক গাজী সদস্য পদে নির্বাচন করেছিলেন। সেবার ঘোড়ায় চড়ে চালিয়েছিলেন নির্বাচনী প্রচারনা। মানুষের ভালবাসায় সিক্ত হয়ে বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়েও তিনি চেয়ারে বসতে পারেননি। পরের দিন ফলাফল ঘোষণায় প্রতিদ্বন্দ্বিকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।
স্থানীয়রা জানান, সিদ্দিকের প্রতি ভালবাসার টানে নাকি তিনিও কোনদিন পরিষদে যাননি। হয়তোবা সেদিনের চেয়ারে বসতে না পারার বেদনা এখনও তাকে তাড়া করে ফেরে। তাইতো এখনো কোথাও নিজ প্রয়োজন কিংবা আমন্ত্রণে গেলে চেয়ারের পরিবর্তে মাটিতে বসতেই তিনি বেশি স্বাচ্ছন্দ বোধ করেন।

সিদ্দিক গাজীকে সংবর্ধনা দিতে আসা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্র বিজ্ঞাণ বিভাগের অধ্যাপক ও শেখ ইমাম উদ্দীন সংসদের আহ্বায়ক ড. স,ম আলী রেজা বলেন, তাঁরা শেখ ইমাম উদ্দীন সংসদের ছায়াতলে সিদ্দিক গাজীদের মত ব্যতিক্রমী প্রতিভা ও মানষিকতার মানুষকে অনুপ্রাণিত করতে ও অনুপ্রানিত হতে চান। ভবিষতে সবার সহযোগিতায় শেখ ইমাম উদ্দীন সংসদ এগিয়ে যাবে বলেও বিশ্বাস তাঁর।
বকুল ট্রি’ খ্যাত সকলের চেনা মুখ বৃক্ষ প্রেমী সিদ্দিক গাজীর দীর্ঘ দিনের লালিত স্বপ্ন সবুজ চিন্তায় সবুজ পৃথিবী’’ বাস্তবায়নে কালের স্বাক্ষী হয়ে রইল শেখ ইমাম উদ্দীন সংসদ। শেখ ইমাম উদ্দীন সংসদের ছোঁয়ায় প্রস্ফুটিত হোক সিদ্দিক গাজীদের সবুজ চিন্তা। সংগঠনটির প্রতি এমনটাই প্রত্যাশা জনপদের সাধারণ মানুষের।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

গরম খবর
menu-circlecross-circle linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram